যেদিন স্বাধীন হবে
স্কুল পালিয়ে বসলো ফাহিম নদীরপাড়ে
আসলো ভ্রমর করলো সালাম দেখলো তারে
হঠাৎ করে গায়ে ঘেঁষে বললো মশাই
পড়ে পড়ে করলে খারাপ পুরো দশাই
ভালোই হলো আসছো যবে গাও তবে গান
খুশি খুশি ঝিলিমিলি করবো যে দান
নাচবো তোমার সুরের তালে তাধিন তাধিন
উল্লাসে আজ মাতবো দুজন স্বাধীন স্বাধীন
গাছের সাথে পিঠ মিশিয়ে নড়ে বসে
বললো ফাহিম মন ভালো নেই,দুইটা দশে
পরলো খসে দু’গাল বেয়ে দু’ফোঁটা জল
ভ্রমর সে কি! কাঁদে না ভাই, সব খুলে বল!
হাল্কা হবে হয়তো তোমার মনের বোঝা
পেতেও পারো, যে সলোশন খুবই সোজা
দেখো না ওই মাছের ঝাকে মাছরাঙা ঠিক
ওতপেতে রয়, ধরেও ফেলে খুব স্বাভাবিক
তুমিও পারো করতে পূরণ ইচ্ছে যতো
দেখবে তোমায় সাহস যোগাই কতো শতো
বললো ফাহিম, বলবো কি আর দুঃখরে ভাই
ভাল্লাগে না শাসন বারণ এই দুনোটাই
আম্মু বলেন পড়রে সোনা মনটা দিয়ে
আব্বু দেখেন স্বপ্ন হাজার আমায় নিয়ে
চুপিচুপি এসব আমার ভাইটি জানায়
তুমিই বলো! ওসব কি আর আমায় মানায়?
তাইতো ক্লাসে ফাঁকি দিয়ে নদীর ধারে
বন্দী দশার গল্প শুনাই পাখিটারে
গাইবো এবং নাচবো সেদিন তাধিন তাধিন
যেদিন হবো পড়াশোনা থেকে স্বাধীন!
রাতের পাখি
রাতের পাখি গাইছে দারুণ গান
কাকের তাতে নেই যে অনুদান
ঘুরছে ঝিনুক নিভু নিভু চুপ
বদলে গেছে বাঁশের ঝাড়ের রূপ
নাচ্ছে কুকুর ঝুমুরঝুমুর পায়
ডাকছে শিয়াল আনন্দ বেশ পায়
ঝিঁঝিঁর ঠোঁটে বাজছে বাঁশির সুর
যাচ্ছে আওয়াজ দূর থেকে ও দূর
হাসছে আকাশ চাঁদ উঠেছে চাঁদ
তারার মেলা বসেছে নেই খাদ
জ্যোছনা ভরা এই সারাটা রাতে
গল্প হলো কাব্য নিরব তাতে
ছড়ার ছন্দে আসছে না সে বিল
যার সাথে ঠিক হয় যে অন্ত্যমিল
করবো কি আর লাগছে না তো ভালো
জ্বালিয়ে দিলাম ঘরের ভেতর আলো
ভাইয়া পাশে, কি হলো তোর খোকা
দিই নি তাঁকে সত্যি কোনো ধোকা
সাথে নিয়ে গেলাম পুকুরপাড়ে
প্রভুর নিয়ামাত দেখালাম তারে
বললো হেসে তাইতো বারংবার
আজকের রাত ভীষণ চমৎকার
ওসব কি ভালো লাগে
ঘুম থেকে জেগে মায়ে
নাস্তার টেবিলে
সারি সারি সাজালেন
খাবারের আইটেম
হাতমুখ ধুতে গিয়ে
জানালার ফাঁক দিয়ে
উঁকিঝুঁকি মেরে দেখে
রাস্তায় নাই জ্যাম
তাই তাড়াতাড়ি করে
রুমে এসে লাগাতার
খোকা খোকা ডেকে ডেকে
একেবারে হয়রান
অবশেষে বই ব্যাগ
টিফিনের বক্স আর
কিছু টাকা দিয়ে কন
হোক তোর খয়রান
যেতে নাহি চাইলেই
কান ধরে পাইলেই
জোরপূর্বক তিনি
পাঠাবেন ইশকুল
কন দেখি এতো সব
সোরগোল কলরব
ওসব কি ভালো লাগে
লাগে না কি বিষ তুল?
আমার দেহ কলবজুড়ে তুমিই শুধু তুমি
তোমার নামে এতো মধু কোথায় থেকে আসে
কোথায় থেকে তাছবি জিকির দরুদ শরীফ ভাসে
কে দিয়েছেন এতো মধু কে দিয়েছেন নাম
এতো দারুণ ধর্ম দিলেন, দিলেন দীন ইসলাম
যতোই ডাকি মনে আঁকি তোমার ছবিখানা
ততই মধু বাড়তে থাকে মেলতে থাকে ডানা
ছড়িয়ে পড়ে তোমার এ নাম আমার শিরায় শিরায়
পাগল হয়ে যাই এ নামে কে আমাকে ফিরায়
বনের যতো পশুপাখি সবাই তোমায় জানে
তোমার আনা সকল বিধান অক্ষর অক্ষর মানে
তোমার ওমন পরোপকার হৃদয় কোমল নদে
কতো মানুষ সাঁতরে বেড়ায় কতো হারাম বদে
সবাই তোমার এই নামে হয় তুমূল আকর্ষিত
গ্রীষ্ম বর্ষা বারো মাস-ই হয় দরুদ বর্ষিত
নামটা তোমার এতো দারুণ এতো যাদুময়
তোমার এ নাম জপলে সারা বিশ্বটা হয় জয়
ইচ্ছে করে তোমার নামে সদায় ডুবে থাকি
দুনিয়ার এই ব্যাস্ততাকে দিই বারেবার ফাঁকি
তোমার নামের তিলাওয়াতে পাঠাই দরুদ চুমি
আমার দেহ কলবজুড়ে তুমিই শুধু তুমি
চাই না কিছুই তোমার কাছে চাই কেবলি দেখা
এতেই আমার মিটে যাবে মনে গাঁথা রেখা
নাই যে তেমন ঈমান আমল একটু’ও যে ওয়ারিশ
তোমার কাছে চাচ্ছি বরং সামান্য সুপারিশ
হাসবে দুনিয়াটা
তুমি তোমার ছোট্ট পুকুর যদি
মাছের খাবার বানাও জানাশোনা
ভেবেই নেবে বুড়িগঙ্গা নদী
ইচ্ছে হলেই করবে আনাগোনা
মাটির টিলা ভেঙে রাঙাও যদি
করবে খারাপ, নিজের কপাল আহা
মরবে কেঁদে তুমিই নিরবধি
দুঃখ তখন বলবে গিয়ে কাহা?
তোমায় দেখে ফেলবে সবাই থুথু
হাসবে সবে–দেবে কাতুকুতু
কেউ দেবে না মাথা গোঁজার ঠাঁই
ভাববে মরণ ছাড়া কিছুই নাই
তুমিই বল,নিজের অবহেলায়
কার হবে এই আকাশসম ক্ষতি!
কিংবা দেখো! দুপুরজুড়ে খেলায়
খোদার হুকুম কী-বা তোমার প্রতি
নয় তো ভালো বাড়াবাড়ি অতি
আসবে শেষে জীবন নদে ভাটা
ঠিক করে নাও সকল মতিগতি
আলোর ধারায় হাসবে দুনিয়াটা।