প্রেমে পড়ার বয়স লাগে?
লাগে অথবা লাগে না
এক পলকে প্রেম শুনেছি
আমার বেলায় দেখছি উল্টো
চুরাবালিতে ধীরে ধীরে তলিয়ে যাবার মতো
আমি তলিয়ে যেতে শুরু করেছি প্রেমে!
অতি সাধারণ মেয়ে!
যে এক সময় আমাকে অসাধারণ ভাবতো
এখন আমি তাকে…
প্রতিনিয়ত ভাবি তার কথা
মোবাইলে বোনাস টকটাইমের জন্য
আটান্নব্বই টাকা রিচার্জ করি
অথচ ভাংতি টাকা রিচার্জ কখনো করেছি বলে মনে হয় না
একটানা সাড়ে বিশ মিনিট কথা বলেও অতৃপ্ত
কী আছে ঐ কণ্ঠস্বরে?
এরকম আগে হতো না!
পরিচয় পর্ব বেশ আগে
২০১০-এর ফেব্রুয়ারির মফস্বলের বইমেলায়
চিপচিপে গড়নের ফর্সা একটা মেয়ে
প্রেমে পড়ার মতো মনে হয়নি তখন
শ্রেফ আড্ডা দেয়া যেতে পারে
ছেলেরা আড্ডা জমাতো তার স্টলের সামনে
আমাকে ভাবায়নি এসব দৃশ্য
আজ ভাবছি
কেন?
প্রেমের বীজ কি তখনই হৃদয়ে রূপিত হয়েছিল নিজের অজান্তেই
টের পাইনি তখন
পরে অনেক দেখা, সাক্ষাত, কথা বলা, একসাথে চলা
কই কিছুইতো বুঝিনি
পৃথিবীতে অনেক কিছু হয়, হয় তো বুঝা যায় না, টের পাওয়া যায় না
আমি অপদার্থ, নির্লজ্জ আরও খারাপ বলতে পারছি না
চৌত্রিশ বছরে এসে কিশোরদের মতো ফোনালাপপে সুখ খুঁজি
ছুঁয়ে দিলে বদলে যাবো ভাবি
সম্ভবত সে আমাকে ছুঁয়ে দিয়েছে তাই প্রতিনিয়ত বদলে
তার দিকে ধাবিত হচ্ছি।
আমার ভালবাসা গ্রহণ হয়তো অমার্জনীয় অপরাধ
তুমি ফোন না উঠালে বুক ধড়পড় করে
মনে হয় হারিয়ে ফেলেছি তোমাকে
শূন্যতা আমাকে ডুবিয়ে রাখে
অশান্তির জ্বলন্ত চিতায়।
তোমার অনুপস্থিতি আমাকে ভাবায়
কেমন যেন করে বুকের ভেতর
রক্তের মিছিল ঘাড়ের শিরা বেয়ে
মাথায় গিয়ে শুরু করে আন্দোলন
হার মানায় মৃত্যু যন্ত্রণাকে।
কী চাও তুমি? অনেক টাকা?
নাকি অনেক ভালবাসা?
মাঝে মাঝে মনে হয়
আমার কাছ থেকে টাকা গ্রহণ অপরাধের নয়
আমার ভালবাসা গ্রহণ হয়তো অমার্জনীয় অপরাধ।
প্রেমে পড়লে মানুষ ছাগল হয়ে যায়
আমাকেও ছাগল ভাবতে পারো।
সব প্রেমিকইতো পাগল উপাধি নিয়েছে
আমি না হয় ছাগলই নিলাম।
বর্ষা মৌসুমে কাঠাল পাতাই ছাগলের বাঁচার যোগান
আমার জীবনে প্রেমের বর্ষা চলছে
তুমি আমার কাঠাল পাতা
তোমায় ছাড়া উপোষ কাটাই দিন;
তোমার কাছে ভালবাসা
চাইছি আমি ঋণ।
দাও বা না দাও করবো না জোর
বলবো না প্রেম দাও,
সুখ যা আমার সবই যেন
তুমিই খুঁজে পাও।
প্রেমে পড়ার সময় পেল না কুত্তার বাচ্চা
আমার মনকে ধরার চেষ্টা করি আজকাল
ইচ্ছে হয় ছাই হাতে খুঁজি মন
যেখানেই পাবো ঝাপটে ধরে
জোরে চপেটাঘাত করি অগণিত।
প্রেমে পড়ার সময় পেলনা কুত্তার বাচ্চা
এই অপদার্থ তোর কী প্রেমে পড়ার বয়স এটা।
এখন কাজ করবে, নিজে খাবে, বৌ-বাচ্ছাকে খাওয়াবে।
প্রেম করবে ষোল্লবছরের ছোকরারা।
চৌত্রিশ বছর বয়সে কিসের প্রেম?
অপদার্থ মন
তোর আকৃতি কিংবা ছায়া সামনে পেলে
বিএনপির পিকেটার দিয়ে পেট্রল বোমায়
জ্বালিয়ে ছারখার করে দিতাম।
জামায়াতের কর্মী দিয়ে গাছকাঠার করাতে
ঘ্যাচ ঘ্যাচ করে কেটে দিতাম ঠ্যাং
শালা প্রেম করতে ছুটে যাও!
হাত পা বেঙ্গে লুলা বানিয়ে
বসিয়ে রাখতাম ঘরে।
প্রেমের নাম ভুলে ইল্লাল্লা ইল্লাল্লাহ তসবি পড়তে!
একশ বাহানায়
একশ বাহানায় তারও বেশি
দাঁড়িয়ে থাকি আমি দেখব তোমায়
কেবলা আমার তোমার বাড়ি
তুমি যাই ভাবো বখাটে
আমি পানি পাণ করি দশঘাটে
না না মিথ্যে সব মিথ্যে
তোমাকে চাই শুধু তোমাকে চাই একশ বাহানায়…
সন্ধ্যা কিবা রাত সকাল দুপুর প্রতি প্রহরে এই মনে
আলগা আলগা ছোঁয়া আলগা আলগা টান
বিশ্বয় ভরা চোখে জাগ্রত প্রহরী আমি…
অদেখা মায়ায় পড়ে আছি বাঁধা
রক্তে রক্তে শিহরণ জাগে
আকাশে বাতাসে জানাজানি তার
নিঃস আমি তোমাকে ছাড়া
বিশ্ব আমার তোমাকে ঘিরে
যে যাই বলে পূজারী তোমার আমি…
কী দেবার আছে বল আমার কাছে
বুকে কষ্টের পাথর চাপা দিয়ে কাঁদি
তোমাকে হারাতে চাই না বলে
এতো বাহানা!
যদি ভুল বুঝ তাই বলি ভালবাসি না
মনের সাথে আজ কাঁদল চোখ
তুমি দেখলে না তুমি জানলে না॥
কেন আমি হতে পারি না তোমার?
কেন পিছু টান নিয়ে আছি
মন যদি ভাল বাসে আমার কী দোষ
মুখে যাই বলি মনের কথা নয়
মন যে তোমায় ছাড়া কিছু বুঝে না॥
কাঁদছি আমি দেখছে আলো
দেখছে বাতাস, দেখছেন প্রভু
তোমাকে দেখাতে পারি না বলেই
কষ্ট এতো এতো হাহোতাশ
কী পেলে তুমি পূর্ণ হবে? সারাক্ষণ ভাবি
কী দেবার আছে বল আমার কাছে
ভালবাসা ছাড়া!
কবিতাই আমাকে আশ্রয় দেয়
কবিতার সাথে দুরত্ব বাড়াতে চেয়েছি এতোদিন
এখন দেখছি কবিতা আমাকে ছাড়েনি।
যখনই কষ্ট আমাকে দাঙ্গা পুলিশের মতো তাড়ায়
আমি নিরাপদ আশ্রয় খুঁজি
তখনই কবিতাই আমাকে আশ্রয় দেয়।
হে কবিতা তুমি মহৎ
তোমাকে দূরে ঠেলে ক্ষমার অযোগ্য অন্যায় করেছি।
যখনই আমার চোখে পানি
তখনই ভাগ বসিয়েছো প্রকৃত বন্ধুর মতো
কষ্টের দিনেই বেশি তোমাকে ডাকি
তুমি কখনো সাড়া দিতে বিলম্ব কর না।
এমন বন্ধু কজনে পায়!
কবিতা তুমি আমায় পূর্ণ করেছো
আমি ধন্য হয়েছি, আমি ধন্য হয়েছি।