ছবি:ইন্টারনেট
যুদ্ধে শহীদ হওয়া দাদা,শত শত একর জমি রেখে যেতে পারেননি! দাদার ভিটা নেই বললেই চলে।বাচ্চাকাল থেকে বাবার পরিশ্রমে গড়ে উঠা মাথা গুঁজানোর জায়গাটুকু হয়েছে শুধু।
আমার বাবা,লোকটা ছোট বেলা থেকেই এত পরিশ্রমী যে বর্ণনা করা যাবেনা। যখন পড়ালেখার জন্য এদিক সেদিক ছুটে বেড়াচ্ছি তখন বাবা বলেনি, “থাম,আমাদের জন্য এত পড়ালেখা না”। বাবা বলেছেন, “জীবনে উন্নতি করতে হলে,পড়ালেখা করতে হবে,প্রয়োজনে দুইবেলা ডাল-ভাতই খাব,তবে তা সম্মানের সহিত খেতে চাই”।
আসলে আমরা মধ্যবিত্তরা এমনই। একটু চাপা স্বভাবের হয়ে থাকি। আমাদের স্বপ্ন যদিও বিরাট দালানকোঠার তবে মাথা গুঁজানোর জায়গা পেলেই আমরা সন্তুষ্ট। ফ্রেন্ড সার্কেলের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে যেন হিমশিম খেতে না হয় তার জন্য বাবা পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে রাখেন।
আর মা?
পাচ হাজার টাকার ঔষধ প্রয়োজন হলেও,
পাঁচশ টাকার ঔষধ কিনে এনে কোনোরকম ব্যথাটাকে চেপে রেখে বলে, ” আরে ডাক্তার এত ঔষধ শুধুশুধু দিছে, এগুলা খেলেই আপাতত চলবে”
মুরগির রান খেতে আমি খুব ভালোবাসি।
তাই কখনো,আম্মুকে দেখিনি নিজের প্লেটে ” মুরগির রান ” তুলে নিতে। চাইলে তিনি সখ করেও একদিন খেতে পারতেন। কিন্তু তিনি বলেছেন, আমি ওসব খাইনা। টানাটানির সংসারে মা কখনো বলেন নি, “এই বইটা পরে কিনলে হবেনা?”
বলেছেন, “আর কোনো বই লাগবে?”
বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাব বললে, “মা বলতো, এত ঘুরাঘুরি না করলে হয়না?”
বায়না ধরে যখন বলতাম, “রিফ্রেশমেন্ট লাগবে”
তখন মা বলতেন, ” তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরিস ” ।
মধ্যবিত্তদের নাম “মধ্যবিত্ত” হওয়ার স্বার্থকতা বোধহয় এখানেই।
লেখকঃ মো.নাঈম উদ্দিন,
ইংরেজি বিভাগ,নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।